Mr. Sohag Rana

গর্ভধারণের জন্যে ভিটামিন-ডি

গর্ভধারণের জন্যে ভিটামিন-ডি কেন প্রয়োজন?

গর্ভধারণের জন্যে ভিটামিন-ডি প্রয়োজন। বর্তমানে মেয়েদের ডিম্বাণুর সমস্যা, ছেলেদের শুক্রানুর সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে অনেক চেষ্টা করেও গর্ভধারণ হচ্ছে না। এর অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে শরীরে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি হওয়া। ভিটামিন ডি গর্ভধারণ এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণ এবং হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্যই কেবল গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং গর্ভধারণ ও প্রজনন স্বাস্থ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন ডি, গর্ভধারণ ও প্রজজন স্বাস্থ্যের উপর কীভাবে কাজ করে তা নিয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করবো ইনশাল্লাহ। ভিটামিন ডি এর সাথে গর্ভধারণ ও প্রজজন স্বাস্থ্যের সর্ম্পক: ১) হরমোন ভারসাম্য রক্ষা করে: আমাদের মস্তিষ্কের একটি গ্রন্থি আছে যার নাম hypothalamus. এই hypothalamus এর নিচে একটি গ্রন্থি থাকে যার নাম পিটুইটারি গ্রন্থি। এই পিটুইটারি গ্রন্থি থেকেই শরীরের বিভিন্ন হরমোন নিয়ন্ত্রণ হয়। ভিটামিন ডি হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি গ্রন্থিকে প্রভাবিত করে, যা আমাদের প্রজনন হরমোন নিঃসরণ ও নিয়ন্ত্রণ করে। ভিটামিন-ডি মেয়েদের এস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন নামক হরমোনের মাত্রা সঠিক রাখতে সাহায্য করে। যা ডিম্বাণু উৎপাদন এবং গর্ভধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পুরুষদের ক্ষেত্রে, ভিটামিন-ডি টেস্টোস্টেরন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে, যা শুক্রাণুর পরিমাণ এবং গুণমান বৃদ্ধি করে। এখন কারো যদি শরীরে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি থাকলে তাহলে শরীরে হরমোনের তারতম্য হবে এবং মেয়েদের ডিম্বাণু ও ছেলেদের শুক্রানুর গুণগত মান নষ্ট হবে। ফলে বাচ্চা নিতে সমস্যা হবে। ২) গর্ভধারণের জন্যে ভিটামিন-ডি কেন প্রয়োজন? ভিটামিন ডি ডিম্বাণুর বিকাশে এবং ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা উন্নত করে। ছেলেদের শুক্রাণুর গুণগত মান কেমন তার নির্ভর করে শুক্রানুর পরিমাণ, গতিশীলতা বা motility এবং শুক্রানুর ডিএনএ-এর উপর। ভিটামিন-ডি শুক্রানুর পরিমাণ, গতিশীলতা এবং ডিএনএ এর গুণমান ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া মেয়েদের ক্ষেত্রে ওভুলেশনের জন্যে মাসিকের নির্দিষ্ট সময়ে ডিম্বাণুর আকার কমপক্ষে ১৮ মি: মি: হতে হয়। ডিম্বাণুর আকার ছোট হলে ওভুলেশন হয় না। ভিটামিন-ডি ডিম্বাণুর আকার বৃদ্ধি করে ফলে ওভুলেশন এবং গর্ভ রোপনে সহায়তা করে৷ এখন কারো যদি ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি থাকে তাহলে শুক্রানুর বা ডিম্বাণুর সমস্যা হবে। ফলে গর্ভধারণ হবে না। এজন্যে গর্ভধারণের জন্যে ভিটামিন-ডি প্রয়োজন। ৩) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ ওভুলেশনের পরে গর্ভধারণের জন্যে শরীরে রোগীর প্রতিরোধ ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা জরুরি, যাতে মায়ের শরীর Implantation বা গর্ভরোপন হয়। ভিটামিন ডি ইমিউন সিস্টেমের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়ায়। ৪) ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ কমানো: শরীরে কোন ইনফেকশন বা প্রজজন তন্ত্রে কোন ইনফরমেশন থাকলে প্রজনন ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ভিটামিন ডি প্রদাহ কমিয়ে ডিম্বাশয় এবং জরায়ুতে একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক। ৫) অ্যান্টি-মুলেরিয়ান হরমোন (AMH) বৃদ্ধি: একজন নারীর শরীরে গর্ভধারণের জন্যে কতগুলো ডিম্বাণু জমা আছে সেটা বুঝা যায় AMH এর মাধ্যমে। AMH ডিম্বাশয়ের ডিম্বাণু উৎপাদনের সক্ষমতা নির্দেশ করে। ভিটামিন ডি এর সঠিক মাত্রা AMH বাড়াতে সাহায্য করে, যা প্রজনন ক্ষমতা বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। কারো যদি শরীরে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি থাকে তাহলে ডিম্বাণুর মান নষ্ট হয়ে যায়। ফলে গর্ভধারণে সমস্যা হয়। এজন্যে গর্ভধারণের জন্যে ভিটামিন-ডি প্রয়োজন। ৬) এন্ডোমেট্রিয়ামের উপর প্রভাব: জরায়ুর ভিতরের স্তরের নাম Endometrium. ওভুলেশনের পরে যখন শুক্রাণু ডিম্বাণু মিলিত হয়ে ভ্রূণের তৈরি হয়, তখন ভ্রূণটি জরায়ুর ভেতরের অংশ এন্ডোমেট্রিয়ামে এসে বসে যায়। এবং গর্ভধারণ করেন। ভিটামিন ডি এন্ডোমেট্রিয়ামকে গর্ভধারণের জন্য আরও গ্রহণযোগ্য করে তোলে। ৭) পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS): PCOS মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের একটি বড় কারণ। শরীরে হরমোনের তারতম্য এবং ইনসুলিন রেসিস্ট্রেন্স এর কারণে PCOS হয়। ভিটামিন ডি ইনসুলিন রেজিস্টেন্স এবং হরমোন ভারসাম্য স্বাভাবিক করে PCOS থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।  ৮) আইভিএফ (IVF) সাফল্যের হার বাড়ানো: গবেষণায় দেখা গেছে, যে-সব মহিলাদের রক্তে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি থাকে, তাদের আইভিএফ-এর মাধ্যমে গর্ভধারণের সাফল্যের হার বেশি। ভিটামিন ডি এর দৈনিক চাহিদা: বয়সের ওপর ভিত্তি করে পরিমান ভিন্ন হয়, – শিশু জন্মের পর থেকে ১ বছর পর্যন্ত: ৪০০ IU (International unit) প্রতিদিন প্রয়োজন। – বয়স ১-৬০ বছর পর্যন্ত: ৬০০ IU (International unit) প্রতিদিন প্রয়োজন। – বয়স যদি ৬০ বছরের বেশি হয়: সেক্ষেত্রে ৮০০ IU (International unit) প্রতিদিন প্রয়োজন। – গর্ভবতী মা বা বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ান এমন মায়ের জন্য: ৬০০ IU (International unit) প্রতিদিন প্রয়োজন। তবে এক্ষেত্রে কিছুটা অতিরিক্ত নেয়া উত্তম। ভিটামিন ডি এর উৎস: বিভিন্ন উৎস থেকে ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়। যেমন ১) সূর্যের আলো, ২) খাবার, ৩) মেডিসিন থেকে। ১) সূর্যের আলো: ভিটামিন-ডি এর প্রথম প্রধান উৎস হলো সূর্যের আলো, আমাদের দৈনিক যে পরিমাণ ভিটামিন-ডি প্রয়োজন তার ৮০ ভাগ আসে সূর্যের আলো থেকে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, দিনের কোন সময় সূর্যের আলোতে থাকা উচিত? উত্তর: কতক্ষণ থাকা উচিত ভিটামিন ডি এর জন্যে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ৩ টার মধ্যে প্রতিদিন ২০-৩০ মিন অথবা সপ্তাহে ১০০ মিনিট সূর্যের আলোতে অবস্থান করলে প্রায় ৮০ ভাগ ভিটামিন-ডি এর চাহিদা পূরণ হবে। তবে ব্যক্তি যদি কালো হয় তাহলে ৩০-৪০ মিনিট থাকতে হবে। কারণ যাদের ত্বকের রং কালো তাদের ত্বকে মেলামিন নামক উপাদান থাকে। মেলামিন সূর্যের আল্টাভায়োলেট বি রশ্নি ত্বকে পৌঁছতে বাধা দেয়। ফলে কালো ত্বকের মানুষের ভিটামিন-ডি কম শোষণ হয়। শরীরের কত টুকু অংশ খোলা রাখবেন? যতটা সম্ভব খোলা রাখুন, বেশ রাখলে বেশি বেনিফিট, তবে ২০-৩০ মিনিট রোধের থাকলে শরীরের ১৮% বা ২ হাত যথেষ্ট। তবে বেশি সময় তীব্র রোদে থাকা উচিত নয় এতে হিট স্ট্রোক হতে পারে।  ২) খাবার: ভিটামিন-ডি বাকি ২০ % আসে খাবার থেকে – খাবারের মধ্যে cod liver oil এ ভিটামিন ডি সবচেয়ে বেশি থাকে। বলা হয় চা ১ চামচে থাকে ১৩৬০ IU থাকে, যা আমাদের দৈনিক চাহিদার দ্বিগুণ। কী কী খাবার থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়? ক) চর্বিযুক্ত মাছ বা সামুদ্রিক মাছ: বিশেষ করে সেলমন, টোনা মাছে প্রায় ১০০ গ্রাম ওজনের এক টুকরো মাছে ভিটামিন-ডি থাকে ৭০০ IU খ) গরুর কলিজা: গরুর কলিজা ভিটামিন ডি এর অন্যতম উৎস। গ) মাখন: ভিটামিন ডি এর জন্য মাখনও ভাল উৎস (তবে চেষ্টা করবেন মাখনটা নিজের হাতে বানানোর) ঘ) ডিমের কুসুম: তারপরে আসছি ডিমের কুসুম, কিন্তু বর্তমানে ডিমের কুসুমে তেমন পাওয়া যাচ্ছে না, কারণ ফার্মের মুরগির গায়ে রোদ পড়ে না যার কারণে কুসুমের রং ফ্যাকাশে হয়, তাতে ভিটামিন ডি এর পরিমাণ কম থাকে সেই দিক থেকে দেশী হাসঁ/মুরগির ডিম হতে পারে বেস্ট অপশন। ঙ) মাসরুম: মাসরুমও ভিটামিন-ডি এর অন্যতম উৎস। এছাড়া রয়েছে কাঠ বাদাম, দুধ ও দুধের তৈরি খাদ্য দ্রব্য, উন্নত দেশগুলোতে যদিও দুধের সাথে আলাদা ভিটামিন-ডি মিশিয়ে বাজার জাত করা হয় যা আমাদের দেশে হয় না। এবং সবশেষে কমলা লেবু। এই খাবার গুলো ভিটামিন ডি এর উৎস হিসেবে অন্যতম। ৩) মেডিসিন: খাবার ও সূর্যের আলো ছাড়াও সরাসরি ভিটামিন ডি খাবার ট্যাবলেট পাওয়া যায়, এক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক খেতে হবে। তবে খাবারে মাধ্যমে ভিটামিন ডি নিতে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ এক্ষেত্রে ভিটামিন ডি বেশি হয় না। আপনি যদি বন্ধ্যাত্ব নিয়ে চিন্তিত

গর্ভধারণের জন্যে ভিটামিন-ডি কেন প্রয়োজন? Read More »

গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন

গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে কি হয়?

গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন প্রত্যেক গর্ভবতী মা এবং গর্ভের শিশুর উভয়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। গর্ভাবস্থায় শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে হিমোগ্লোবিন না থাকলে গর্ভের সন্তানের ব্রেইন ও হাড় গঠনে সমস্যা হতে পারে। রক্তের হিমোগ্লোবিন শরীরে অক্সিজেন পরিবহণ করে এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করে, এছাড়া বিভিন্ন মাইক্রো nutrients  পরিবহণ করে। যারা গর্ভধারণ করেছেন কিংবা বাচ্চা নিতে চাচ্ছেন তাদের জন্যে রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক থাকা অত্যন্ত জরুরি। হিমোগ্লোবিন কি? আমরা জানি রক্তে ৩ ধরনের কোষ আছে ক) শ্বেত রক্ত কনিক, খ) লোহিত রক্ত কনিক, গ) অনুচক্রিকা। এই লোহিত রক্ত কনিকায় একটি উপাদান থাকে যার নাম “হিমোগ্লোবিন” সহজে বলতে গেলে “হিমোগ্লোবিন হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন যা লোহিত রক্তকণিকায় (RBC) উপস্থিত থাকে এবং শরীরের টিস্যুগুলিতে অক্সিজেন পরিবহণ করে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতির কারণেই রক্ত লাল দেখায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করার মাধ্যমে শরীরের কার্যক্রম সচল রাখতে সহায়তা করে”। রক্তের উৎপাদন লোহিত কণিকা বা হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়াকেই রক্ত স্বল্পতা বা রক্তশূন্যতা বলে। গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন এতে জরুরি কেন? গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন গর্ভের সন্তান এবং মা উভয়ের জন্য জরুরি। গর্ভের সন্তানের ক্ষেত্রেঃ একজন মা যখন গর্ভধারণ করেন তখন তার শরীরে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান, আয়রন এবং রক্তের চাহিদা বৃদ্ধি পায়, কারণ মায়ের শরীরকে গর্ভস্থ শিশুর জন্য রক্ত তৈরি করতে হয়। গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন এর ঘাটতি থাকলে গর্ভের সন্তানের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। যার ফলে গর্ভের সন্তানের ওজন কম হয়। এছাড়া গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি থাকলে গর্ভের সন্তানের জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। সন্তান হাবাগোবা হতে পারে। সন্তানের রোগীর প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রেঃ গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন এর ঘাটতি থাকলে , গর্ভবতী মহিলাদের প্রায়ই ক্লান্তি ও দুর্বলতার সম্মুখীন হতে হয়। কারণ হিমোগ্লোবিন অক্সিজেনের সঠিক পরিবহণ নিশ্চিত করে, যা কোষের কার্যকারিতা ও এনার্জি স্তর ঠিক রাখার জন্য অপরিহার্য। গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে হিমোগ্লোবিন এর ঘাটতি থাকলে সময়ের আগে ডেলিভারি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এছাড়া ডেলিভারির সময় মায়ের শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হয়, হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকলে ডেলিভারির সময় মায়ের জীবনও ঝুঁকি মধ্যে থাকে।  এজন্যেই গর্ভাবস্থায় মায়ে শরীরে পর্যাপ্ত হিমোগ্লোবিন থাকা জরুরি। হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রাঃ একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা হলো ১৩-১৮ গ্রাম/ডেসিলিটার এবং প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের ১২-১৬ গ্রাম/ডেসিলিটার। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের জন্য হিমোগ্লোবিনের মান সাধারণত নন-প্রেগন্যান্ট মহিলাদের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা নিম্নরূপ হওয়া উচিত: গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে: ১১.০ গ্রাম/ডেসিলিটার বা এর বেশি গর্ভধারণের ৪-৬ মাসে: ১০.৫ গ্রাম/ডেসিলিটার বা এর বেশি এর থেকে কম হলে একে রক্ত স্বল্পতা বলে। হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়? সাধারণত হিমোগ্লোবিনের মাত্রা যদি ৮ গ্রাম/ডেসিলিটার এর কম হয় তখন রক্ত দেয়ার প্রয়োজন হয়। তবে গর্ভাবস্থায় রক্ত দেয়া কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গর্ভবতী মায়ের অবস্থার অবস্থার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসকগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে যায় কেন? গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার অনেক কারণ রয়েছে । যেমন ১) যদি রক্তক্ষরণ হয়ঃ যেহেতু লোহিত রক্ত কণিকা, হিমোগ্লোবিন রক্তেরই অংশ, তাই যেকোনো কারণেই যদি শরীর থেকে রক্ত বের হয় যায় তাহলে, শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা ও হিমোগ্লোবিন এর ঘাটতি হবে ফলে রক্ত স্বল্পতা হবে। এটি হতে পারে কোন দুর্ঘটনা জনিত কারণ, পাইলস, হিমোরয়েড, কোন অপারেশন, যোনিপথে রক্তপাত এমনি মেয়েদের মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ। ২) আয়রন ঘাটতিঃ আয়রন হিমোগ্লোবিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গর্ভাবস্থায় আয়রনের চাহিদা বেড়ে যায় কারণ মায়ের শরীরকে গর্ভস্থ শিশুর জন্য রক্ত তৈরি করতে হয়। তাই, আয়রনের অভাব হলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যেতে পারে। ৩) ফলিক অ্যাসিড ও ভিটামিন বি-১২ ঘাটতিঃ লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদনের জন্যে ফলিক অ্যাসিড ও ভিটামিন বি-১২ এর প্রয়োজন হয়। এখন শরীরে যদি ফলিক অ্যাসিড ও ভিটামিন বি১২ এর ঘাটতি থাকে তাহলে রক্ত স্বল্পতা হতে পারে। ভিটামিন বি-১২ ও ফলিক অ্যাসিড আমরা সরাসরি পাই খাবার থেকে। আমরা যদি প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ভিটামিন বি-১২ ও ফলিক অ্যাসিড জাতীয় কম খাই তাহলে এর ঘাটতি হতে পারে বিশেষ করে যারা vegetarian তাদের সমস্যা হতে পারে। খাওয়ার পরে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত থেকে ভিটামিন বি-১২ ও ফলিক অ্যাসিড শোষণ হয়, এখন যদি কারো হজম জনিত সমস্যা যেমন IBS (Irritable BowelSyndrome)  থাকে তাহলে এগুলোর ঘাটতি হতে পারে। ৪) এছাড়া কৃমির সমস্যা থাকলেও শরীরে রক্ত স্বল্পতা হতে পারে। ৫) কিছু ঔষধ আছে যেগুলো শরীরে আয়রন শোষণ কমিয়ে দেয় বিশেষ করে গ্যাসের ঔষধ। যারা অতিরিক্ত গ্যাসের ঔষধ খায় তাদের কিন্তু হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি হতে পারে। তো গর্ভাবস্থায় প্রায় সকল মায়েদেরই খাওয়ার অরুচি, বমি হওয়া, গ্যাসের সমস্যা বেশি হয়। যার ফলে পর্যাপ্তা আয়রন ও ভিটামিন জাতীয় খাবার খেতে পারে না। এছাড়া গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে আয়রন চাহিদা থাকে বেশি। একদিকে আয়রনের চাহিদা বেশি অন্যদিকে খেতে না পারা, মূলত এই কারণেই গর্ভাবস্থায় কমবেশি সবার শরীরে হিমোগ্লোবিন বা রক্তের স্বল্পতা দেখা দেয়। হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার লক্ষণঃ ১) কিছু লক্ষণ দেখে হিমোগ্লোবিন এর ঘাটতি অনুমান করা যায়। যেমন সবসময় ক্লান্তি বা অবসাদ লাগা – শরীর দুর্বল অনুভব হওয়া – বুক ধড়ফড় করা – অল্পতেই শ্বাস কষ্ট হওয়া বা অল্প পরিশ্রমে হাপিয়ে যাওয়া – ত্বক ঠান্ডা হয়ে যাওয়া – মুখে ও ঠোটে ঘা হওয়া। – নখ ভঙ্গুর হওয়া – বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট হওয়া। – এছাড়া শরীর ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা পরিক্ষাঃ সরাসরি রক্তের পরীক্ষা যেমন CBC (Complete Blood Count) অথবা Blood for Hb% টেস্ট করে দেখা যায়। এই ২টি টেস্টের যেকোনো একটি টেস্ট করে যদি দেখেন হিমোগ্লোবিন ১১.০ গ্রাম/ডেসিলিটার বা এর বেশি তাহলে এটি স্বাভাবিক মাত্রায় রয়েছে। যদি হিমোগ্লোবিন ১১.০ গ্রাম/ডেসিলিটার এর কম থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনার রক্ত স্বল্পতা রয়েছে। গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির উপায়ঃ ১) প্রথম উপায় হচ্ছে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার: এমনি কিছু খাবার আছে যেগুলো আপনার শরীরে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করবে। সাধারণত লাল শাক, পালং শাক, কচু শাক, কলার মুচি, সুবজ ও রঙিন শাক সবজি থেকে আয়রন পাওয়া। অনেক সময় এগুলো নিয়মিত খাওয়ার পরেও তেমন সুফল পাওয়া যায় না। এর কারণ হলো আয়রন দুই ধরনের হয় একটি হিম আয়রন আরেকটি নন হিম আয়রন। শাক সবজি ফল মূল থেকে সাধারণ নন হিম যুক্ত আয়রন পাওয়া যায়। আমরা যখন শাক সবজি রান্না করি তখন বেশির ভাগ নন হিম আয়রন নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমাদের আয়রনের ঘাটতি থেকে যায় এবং রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয়। তাই শাক সবজির পাশাপাশি ফল খাওয়া হচ্ছে বেস্ট অপশন। ফলের মধ্যে, আনার, কলা, পাকা পেঁপে, টমেটো, স্ট্রবেরি ইত্যাদি তে প্রচুর পরিমাণ আয়রন ও ভিটামিন বি১২ বিদ্যমান। অপরদিকে গরুর মাংস, খাসির মাংস, কলিজা, ডিম, সামুদ্রিক মাছ বাদাম, অর্থাৎ যেগুলো প্রথম শ্রেণীর প্রোটিন এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে হিম আয়রন থাকে যা রক্ত স্বল্পতা দুর করতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। ২. ফলিক অ্যাসিড ও ভিটামিন বি-১২: ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি-১২ হিমোগ্লোবিন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিচে কিছু ফলিক

গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে কি হয়? Read More »

যোনিতে চুলকানি

৬ টি ঘরোয়া উপায়ে যৌনাঙ্গে চুলকানি দূর করুন।

যৌনাঙ্গে চুলকানি জনিত সমস্যাটি প্রত্যেকটা নারী তার জীবনের কোন না কোন সময় অনুভব করে থাকেন। এটি খুবই কমন এবং সাধারণ সমস্যা গুলোর মধ্যে একটি। কিন্তু কখনো কখনো এই সাধারণ সমস্যাটি বেশ অস্বস্তিকর এবং বিরক্তিকর হতে পারে। এছাড়া যোনিতে চুলকানি মেয়েদের প্রজনন তন্ত্রের কিছু জটিল রোগেরও ইঙ্গিত দেয়। যোনিতে চুলকানি নিয়ে বিস্তারিত জানবো আজকের আর্টিকেল । যৌনাঙ্গে চুলকানি বলতে কি বুঝায়? যোনিতে চুলকানি বলতে সাধারণত মেয়েদের গোপন অঙ্গ বা যোনির আশেপাশের ত্বকে অস্বস্তিকর এবং বিরক্তিকর চুলকানির অনুভূতিকে বোঝায়। এই চুলকানি সাধারণত যোনির ত্বক এবং যোনির ভেতরের অংশে হতে পারে এবং এর পিছনে থাকতে পারে বিভিন্ন ইনফেকশন জনিত স্বাস্থ্য সমস্যা। যোনির স্বাভাবিক পরিবেশ: মেয়েদের যোনিপথে বিভিন্ন রকম ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক বসবাস করে। এসব জীবনু থেকে যৌনি পথকে রক্ষা করার জন্য যোনিতে সবসময় কিছু স্রাব নিঃসৃত হয় (যদিও সবসময় স্রাব দৃশ্যমান হয়না, পরিমাণে বেশি হলেই দেখা যায়)। মেয়েদের যোনি পথে যে তরল স্রাব নিঃসৃত হয় তার pH এর মাত্রা হলো ৪-৫ অর্থাৎ এটি এসিডিক (কোন তরলের pH এর মাত্রা যত কম সেটি ততই এসিডিক হয়) । যোনির পরিবেশ এসিডিক হওয়ার কারণেই কোন ব্যাক্টেরিয়া ভাইরাস ছত্রাক সহজে যৌনিতে সংক্রমণ করতে পারে না। কিন্তু কোনো কারণে যদি যোনির pH এর মাত্রা নষ্ট হয়ে যায় তখন যোনিতে বিভিন্ন ইনফেকশন হয়। যোনির স্রাব এসিডিক হওয়ার ফলে, অনেক সময় মেয়েদের অন্তবাসের রং ও পরিবর্তন হয়ে যায়, যার কারণে অনেকেই ভয় পান। এটি একদমই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। যৌনাঙ্গে চুলকানির কারণ এখন যোনিতে চুলকানির বিভিন্ন কারণ গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক। ১) Chemical product: আপনি জানলে অবাক হবেন, যোনিতে চুলকানির জন্যে সবচেয়ে দায়ী হচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন পণ্য। যোনির ত্বক খুবই সেনসেটিভ। যোনি পরিষ্কার করার জন্যে অধিকাংশ নারীরাই বিভিন্ন সাবান, লোশন, এন্টিসেপটিক ও বিভিন্ন সুগন্ধি ব্যবহার করে থাকেন। এই প্রোডাক্ট গুলোতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ক্যামিক্যালের কারণ অধিকাংশ নারীদের যোনিতে চুলকানি হয়। এছাড়া, স্যানিটারি প্যাড, hair removal cream, underwear, latex কনডম, রঙিন টিস্যু পেপার ইত্যাদি থেকেও যোনিতে চুলকানি হতে পারে। এই প্রোডাক্ট গুলোতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ক্যামিক্যাল গুলো যোনিতে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে এবং যোনির pH এর মাত্রা নষ্ট করে দেয়। ফলে যোনিতে চুলকানি সহ বিভিন্ন সংক্রমণ রোগীর হয়। এছাড়া অনেকেই সহবাসের সময় বিভিন্ন লোশন বা জেলি ব্যবহার করে থাকে,সেখান থেকেও যোনিতে চুলকানি হতে পারে। ২) বিভিন্ন সংক্রমণ ক) ইস্ট ইনফেকশন (Yeast infection): ইস্ট ইনফেকশন মূলত এক ধরনের ফাংগাল ইনফেকশন। এগুলোকে ভ্যাজাইনাল ক্যানডিডা ইনফেকশন ও বলে। এ ধরনের ইনফেকশনে সাধারণত যোনিতে চুলকানি, জ্বালা পোড়া অনুভূত হয় এবং যোনিপথে সাদা চিটচিটে স্রাব হতে পারে। খ) ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস (Bacterial Vaginosis): যদি কোন কারণে যোনির pH লেভেল নষ্ট হয়ে যায় ফলে যোনিতে সংক্রমণ হয়, এছাড়া অপরিকল্পিত ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের কারণে যোনিতে থাকা উপকারী ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যা কমে যায় ফলে যোনিতে ইনফেকশন হয়। এ ধরনের ইনফেকশন হলে যোনিতে চুলকানির পাশাপাশি অন্যান্য লক্ষণ গুলো হলো, অতিরিক্ত সাদা স্রাব, যোনিতে ব্যথা, সহবাসের সময় ব্যথা ও জ্বালাপোড়া, সাদা স্রাবের সাথে দুর্গন্ধ (অনেকটা কাচা মাছের মতো দুর্গন্ধ) হতে পারে। গ) STD (Sexually Transmitted Diseases): যারা একাধিক সঙ্গীর সাথে যৌনমিলন করেন তাদের বিভিন্ন যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। যেমন ট্রাইকোমোনিয়াসিস, গনোরিয়া, ক্লামাইডিয়া ইত্যাদি। এই ধরনের ইনফেকশন হলে যোনিতে চুলকানির পাশাপাশি অস্বাভাবিক স্রাব হবে, স্রাবের রং হলুদ বা সবুজ রঙের হতে পারে। ৩) চর্ম রোগ: যোনির আশেপাশে বিভিন্ন চর্মরোগ যেমন ত্বকের প্রদাহ, স্কেবিস, একজিমা, সোরিয়াসিস ইত্যাদির কারণে যোনিতে চুকানি হতে পারে। ৪) হরমোনের পরিবর্তন: মেয়েদের যোনিতে ভেজা রাখার জন্যে স্রাব নিঃসৃত হয়, ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন যোনিতে স্রাব নিঃসৃত হওয়ার কাজ করে। যাদের বয়স ৪৫-৫০ এর বেশি তাদের যোনিতে চুলকানি সাধারণত হরমোনের পরিবর্তনের কারণে হয়। মেনোপজের পরে শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কম থাকে ফলে, যোনিতে স্রাব তুলনামূলক কম থাকে তখন যোনি শুকনো ভাব হয় এবং চুলকানি হয়। এছাড়া যাদের বয়স কম অর্থাৎ মাসিক শুরুর দিকে এবং গর্ভাবস্থায় এই হরমোনের প্রভাবে যোনিতে সংক্রমণের ঝুঁকি বারে এবং চুলকানি হতে পারে। ৫) এছাড়া মানসিক চাপ স্ট্রেস, খাদ্যাভ্যাস, ডায়বেটিস, স্থূলতা ,ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও যোনিতে চুলকানি হতে পারে। ৬) জরায়ুর মুখের ক্যানসারও চুলকানির কারণ। যোনিতে চুলকানি হলে কি কি পরীক্ষা করতে হয়? যৌনাঙ্গে চুলকানি সঠিক কারণ নির্ণয় করা জরুরি, কেননা বিভিন্ন কারণের জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা প্রয়োজন। কেন যোনিতে চুলকানি হচ্ছে তা নির্ণয়ের জন্য কিছু সাধারণ ধাপ নিচে উল্লেখ করা হলো: ১. মেডিক্যাল ইতিহাস: ডাক্তার প্রথমে রোগীর মেডিক্যাল ইতিহাস জানতে চাইবেন, যেখানে অতীতের সংক্রমণ, যৌন স্বাস্থ্য, এবং কোন পণ্য বা ওষুধ ব্যবহারের তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ২. শারীরিক পরীক্ষা: যোনির শারীরিক পরীক্ষা এবং চুলকানির অবস্থান এবং প্রকৃতি বোঝা যায়। ৩. ল্যাব পরীক্ষা যোনির স্রাব পরীক্ষা: সংক্রমণের ধরন নির্ধারণে সাহায্য করে। রক্ত পরীক্ষা: হরমোনের স্তর এবং অন্যান্য সংক্রমণ পরীক্ষা করতে। স্কিন বায়োপসি: ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা নির্ণয়ে। আল্ট্রাসনোগ্রাফি সবার যে সব পরীক্ষা করতে হবে বিষয়টা এমন নয়। চিকিৎসক আপনার কথা শুনে, রোগের অবস্থা দেখে পরীক্ষা করতে দিবেন। যৌনাঙ্গে চুলকানির লক্ষণ যৌনাঙ্গে চুলকানি সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এই লক্ষণগুলি নিম্নরূপ: চুলকানি: প্রধান এবং সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। পোড়া অনুভূতি: যোনির ত্বকে পোড়া বা জ্বালা অনুভূতি। স্রাব: সাদা বা হলুদ স্রাব যা স্বাভাবিকের থেকে ভিন্ন এবং দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব হতে পারে। লালভাব: যোনির চারপাশে লালভাব বা ফোলাভাব। ব্যথা: বিশেষ করে প্রস্রাবের সময় বা যৌনমিলনের সময় ব্যথা। যৌনাঙ্গে চুলকানির ঘরোয়া সমাধান: যৌনাঙ্গে চুলকানি হলে নিম্ন লিখিত ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিতে পারেন। ১) বেকিং সোডা: বেকিং সোডাতে এন্টি-ফাংগাল ইফেক্ট রয়েছে। বেকিং সোডা ব্যবহার করলে ইস্ট ইনফেকশনের বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে। ব্যবহার বিধি: এমন একটি পরিষ্কার বোল/পাত্র নিন যেন আপনি এটিতে বসতে পারেন। এবার পাত্রটির ১/৪ (চার ভাগের এক ভাগ) পানি নিন।  এতে ২ কাপ বেকিং সোডার যোগ করুন।  ভালো ভাবে মিশানোর পরে, পাত্রের পানিতে ২০-৩০ মিনিট বসে থাকুন। এতে যৌনাঙ্গে চুলকানি অনেকাংশেই আরাম হবে। ২) দই: দই একটি ভালো মানের প্রোবায়োটিক। এতে উপকারী ব্যাক্টেরিয়া এবং এন্টি-ফাংগাল এজেন্ট রয়েছে। যোনির চুলকানি কমাতে যোনির চারপাশে, যোনিতে টকদই দিয়ে পেস্ট বানিয়ে লাগাতে পারেন। এবং এই সময় টক দই খেতে পারেন। ৩) ঢিলেঢালা সুতির অন্ত বাস ব্যবহার করুন। এতে করে যোনির অস্বস্তি দুর হবে। ৪) নারকেল তেল: নারকেলের তেল candida albicans নামক জীবাণু ধ্বংস করে। যোনিতে চুলকানি কমাতে ভালো মানের পিউর নারকেল তেল যোনিতে ব্যবহার করতে পারেন। যোনিতে কোন ফোসকা হলে বা ক্ষত হলে নারকেল তেল যোনিতে ব্যবহার করতে পারেন। ৫) প্রোবায়োটিক জাতীয় খাবার যেমন টিক দুই, কলা, ইত্যাদি খেতে পারেন। ৬) চুলকানি থেকে তাৎক্ষণিক রেহাই এর জন্য বরফ বা বরফ-ঠান্ডা জলের সেঁক দিতে হবে। বিশেষ করে রাতের বেলা যখন চুলকানির তীব্রতা খুব বেশি হয় তখন এই বরফ বা বরফ-ঠান্ডা জলের সেঁক দিলে সেটি খুবই কার্যকারী হয়। যৌনাঙ্গে চুলকানির চিকিৎসা চিকিৎসা নির্ভর করে কেন আপনার যৌনাঙ্গে চুলকানি

৬ টি ঘরোয়া উপায়ে যৌনাঙ্গে চুলকানি দূর করুন। Read More »

চকলেট সিস্ট

চকলেট সিস্ট হলে গর্ভধারণে সমস্যা হয়?

বর্তমানে শতকরা ৮-১৮%  নারীরা বিভিন্ন সিস্টের সমস্যার ভোগে থাকেন। এর মধ্যে খুব কমন এক ধরনের সিস্ট হচ্ছে চকলেট সিস্ট। মেয়েদের মাসিকের সময় পেটে ব্যথা, বন্ধ্যাত্বের সমস্যার অনেক গুলো কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে এন্ডোমেট্রিওসিস বা চকলেট সিস্ট । তো আজকে আমরা জানবো, চকলেট সিস্ট কি? কেন হয়? এর লক্ষণ ও চিকিৎসা কি? এবং এই সিস্ট হলে পরবর্তীতে বাচ্চা নিতে কোন সমস্যা হয় কিনা? চকলেট সিস্ট কি ? চকলেট সিস্ট বুঝার আগের আমাদেরকে কিছু বেসিক বিষয় বুঝতে হবে। ছবিটি লক্ষ্য করুন এটি মেয়েদের প্রজনন তন্ত্রের একটি ছবি। জরায়ুর ভেতরের অংশের না এন্ডোমেট্রিয়াম (Endometrium). সাধারণত মাসিকের সময় বিভিন্ন হরমোনের পরিবর্তনের ফলে এন্ডোমেট্রিয়াম পচে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয় এবং যোনি পথে বের হয় যাকে আমরা মাসিক বলে থাকি। কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে এন্ডোমেট্রিয়াম এর কোষ গুলো জরায়ু ছাড়াও, জরায়ুর বাহিরে অংশ যেমন ওভারি,  ফেলোফিয়ান টিউব, মূত্রথলী অর্থাৎ পেটের যেকোনো অংশে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। মাসিকের সময় হরমোনের পরিবর্তনের ফলে এন্ডোমেট্রিয়াম কোষ গুলো  জরায়ু এবং জরায়ুর বাহিরে যেখানেই থাকে সবজায়গায় থেকে রক্ত ক্ষরণ হয়। এই অবস্থাকে এন্ডোমেট্রিওসিস (endometriosis) বলা হয়। কোনো কারণে যদি এন্ডোমেট্রিয়াম কোষ গুলো মেয়েদের ওভারি বা ডিম্বাশয়ে থাকে তখন মাসিকে হলে ওভারি বা ডিম্বাশয়ের ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়। জরায়ুর ভেতরের রক্ত সাধারণত যোনি পথে বের হতে পারে, কিন্তু ডিম্বাশয়ের ভেতরে রক্তক্ষরণ হলে বের হতে পারে না, ফলে সেখানে রক্ত জমা হয়ে একটা সিস্ট তৈরি হয়। যাকে ovarian endometrioma বলা হয়।  এই সিস্টের রঙের অনেকটা চকোলেটের মতো হয় বলেই Ovarian endometrioma কে চকলেট সিস্ট বলা হয়। একদম সহজ ভাষায় বললে, মাসিকের রক্ত ওভারি বা ডিম্বাশয়ে জমা হয়ে যখন সিস্ট তৈরি করে, সেই সিস্টকে চকলেট সিস্ট (chocolate cyst) বলা হয়। চকলেট সিস্ট কেন হয়? চকলেট সিস্ট বা ovarian endometrioma মূলত এন্ডোমেট্রিওসিস এর একটা অংশ। এন্ডোমেট্রিওসিস এ আক্রান্ত শতকরা ১৮-৪৪% নারীদের  এই সিস্ট হয়ে থাকে। এর সুনির্দিষ্ট কোন কারণ এখনো চিকিৎসা বিজ্ঞানে অজানা। তবে কিছু সম্ভাব্য কারণ রয়েছে। যেমন ১) Retrograde Menstruation: যখন মাসিক হয় তখন মাসিকের রক্ত যোনি পথে দিয়ে বের হয়ে যায়, কিন্তু মাসিকের রক্ত যদি ডিম্বাশয় বলা অন্য কোথায় চলে যায় তখন তাকে Retrograde menstruation বলে। অর্থাৎ মাসিকের রক্ত উলটো পথে চলে যায়। মাসিকের রক্ত ওভারি বা ডিম্বাশয়ে জমা হয়ে সিস্ট তৈরি করে। ২) এন্ডোমেট্রিয়াল সেল ট্রান্সপ্লান্টেশন: কিছু গবেষক বিশ্বাস করেন যে, মাসিকের সময় এন্ডোমেট্রিয়াল কোষ গুলো রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে পেটের অন্যান্য অংশে পৌঁছে যায় এবং সেখানে বৃদ্ধি পায়। মাসিকের সময় বিভিন্ন হরমোনের পরিবর্তনের ফলে সেই কোষ গুলো থেকে রক্তক্ষরণ হয় এবং সিস্ট তৈরি হয়। ৩) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: শরীরে রোগীর প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণে মাসিকের সময় রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে যে এন্ডোমেট্রিয়াল কোষ গুলো পেটের অন্যান্য অংশে পৌঁছে যায় , সেগুলো ধ্বংস করতে পারে না। তখন এধরনের সিস্ট হতে পারে। ৪) বংশগত: এছাড়া কিছু বংশগত কারণে হতে পারে। পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে এন্ডোমেট্রিওসিস থাকলে এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে । চকলেট সিস্টের লক্ষণ চকলেট সিস্টের লক্ষণগুলো ভিন্ন হতে পারে, তবে সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা যায়: ১) পেটে ব্যথাঃ এর সবচেয়ে কমন লক্ষণ হচ্ছে ব্যথা। মাসিকের সময় পেটে ব্যথা হতে পারে, সহবাসের সময় ব্যথা হতে পারে, প্রস্রাব পায়খানার সময় ব্যথা হতে পারে, ২) বারবার প্রস্রাবের বেগ হতে পারে। ৩) কোমড়ে ব্যথা হতে পারে। ৪) বমি ভাব বা বমি হতে পারে। ৫) মাসিকের সময় অতিরিক্ত ও অনিয়মিত রক্তপাত হতে পারে। ৬) এই সিস্টের কারণে ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে, ফলে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে চকলেট সিস্ট হলেও কোন লক্ষণ প্রকাশ পায়না। চকলেট সিস্ট বুঝার জন্যে কি কি পরীক্ষার প্রয়োজন হয়? চকলেট সিস্ট নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলো করে নিশ্চিত হওয়া যায় । ১) আল্ট্রাসাউন্ড: সাধারণত পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাফি বা TVS (Transvaginal Sonography) করে সিস্টের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায় । এটি একটি সাধারণ এবং প্রাথমিক পরীক্ষা। ২) এমআরআই: যদি আল্ট্রাসাউন্ড থেকে পরিষ্কারভাবে সিস্ট নির্ণয় করা না যায়, তবে এমআরআই (MRI) বা CT Scan করে সিস্টের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়। ৩) ল্যাপারোস্কোপি: এটি একটি সার্জিকাল পদ্ধতি, যা সরাসরি অপারেশন করে দেখতে সাহায্য করে যে ডিম্বাশয়ে সিস্ট রয়েছে কিনা। তবে এটি ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য হওয়া সচরাচর করা হয়না। চকলেট সিস্টের চিকিৎসা চিকিৎসা নির্ভর করে রোগীর বয়স, সিস্টের আকার-আকৃতি, অবস্থান , সিস্ট  কি একপাশে নাকি উভয় ডিম্বাশয়ে, রোগীর কোন সন্তান আছে কিনা, বা এখন বাচ্চা নিতে চাচ্ছেন কিনা, এবং রোগীর উপসর্গের উপর। এই সবগুলো বিষয় বিচার বিবেচনা করে চিকিৎসার পরিকল্পনা করা হয়। সাধারণত দুই ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে ১) মেডিক্যাল টিট্রমেন্ট ২) সার্জিক্যাল টিট্রমেন্ট ১) মেডিক্যাল টিট্রমেন্টঃ যদি সিস্টের আকার ৩ সে:মি এর ছোট হয় এবং অন্য কোন লক্ষণ না থাকে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকগণ কিছুটা সময় নিবেন। সাধারণত জন্মনিয়ন্ত্রন পিল দিবেন সাথে ব্যথা নাশক ঔষধ দিবেন। জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ওভুলেশন হতে দিবে না ফলে সিস্ট বড় হতে পারবে না এবং ব্যথাও কমে আসবে। তবে এটা স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। ২) সার্জিক্যাল টিট্রমেন্টঃ যদি সিস্টের আকার ৪ সে:মি বা তার চেয়ে বড় হয় এবং অনেক বেশি ব্যথা থাকে সেক্ষেত্রে অপারেশন করতে হয়। যাকে ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি বলা হয়। তবে ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি করার পূর্বে আরো কিছু টেস্ট করার প্রয়োজন হয়, যেমন AMH (Anti-Mullerian Hormone) ও TVS (Transvaginal Sonography)। এই দুইটি টেস্ট করে বুঝা যায় একজন মায়ের সন্তান জন্মদানের জন্যে ডিম্বাণুর পরিমাণ কেমন রয়েছে।যেহেতু সিস্ট ডিম্বাশয়ে হয়, এবং সেখানে অপারেশন করলে ডিম্বাশয় এবং ফ্যালোপিয়ান টিউব ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সেজন্য অপারেশন করার পূর্বে এধরনের টেস্ট করা হয়। দুঃখজনক বিষয় হলো, অপারেশন করলেও পরবর্তীতে আবার চকলেট সিস্ট হতে পারে। কারণ অপারেশন করে সিস্ট রিমুভ করা যায় কিন্তু সেখানে থাকে এন্ডোমেট্রিয়াম কোষ গুলোকে পুরোপুরি রিমুভ করা সম্ভব নাও হতে পারে। তখন আবার এই সিস্ট হতে পারে। সুতরাং  অপারেশন ও ১০০% স্থায়ী কোন সমাধান নয়। তবে যদি রোগীর অসহ্য ব্যথা থাকে সেক্ষেত্রে ব্যথার কথা চিন্তা করে অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে রোগীর অবস্থার উপর। চকলেট সিস্টের স্থায়ী সমাধান কি? ১) মনোপোজ: মাধারণত মেয়েদের ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সে মাসিক বন্ধ হয়ে যায়, মাসিক বন্ধ হওয়াকে মনোপোজ বলে। মনোপোজ এর সময় এটি এমনি ঠিক হয়ে যায়। যেহেতু মাসিকের রক্ত ডিম্বাশয়ে জমা হয়ে সিস্ট তৈরি হয় তাই মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে রক্ত ডিম্বাশয়ে জমা হবে না। তখন এটি নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়। ২) ডিম্বগ্রন্থিচ্ছেদন বা ওফোরেক্টমি:  অপারেশন করে ডিম্বাশয় কেটে ফেললে চকলেট সিস্ট স্থায়ী ভাবে ঠিক হয়। কিন্তু সমস্যা হলো যে নারীর ডিম্বাশয় কেটে ফেলা হবে, সে নারীর পক্ষে আর কোনদিনই  স্বাভাবিক গর্ভধারণ সম্ভব হবে না। এছাড়া ডিম্বাশয় মেয়ের বিভিন্ন হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই সবার বেলায় ডিম্বগ্রন্থিচ্ছেদন বা ওফোরেক্টমি করা যায় না। এধরনের অপারেশনের পূর্বে রোগীর বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। চকলেট

চকলেট সিস্ট হলে গর্ভধারণে সমস্যা হয়? Read More »

গর্ভাবস্থায় পেট কখন বড় হয়

গর্ভাবস্থায় পেট কখন বড় হয়? গর্ভাবস্থায় পেট ছোট হওয়ার ৫টি কারন।

গর্ভধারনের পরে গর্ভাবস্থায় পেট কখন বড় হয় এটি জানার আগ্রহ প্রায় সকল গর্ভবতী মায়েদেরই থাকে। কারন গর্ভধারণের সময় বৃদ্ধির সাথে সাথে গর্ভের সন্তানের আকার আকৃতি যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি গর্ভবতী মায়ের পেটের আকার আকৃতি ও বৃদ্ধি পায়। তবে কারো পেট আগে বড় হতে দেখা যায় কারো আবার পরে। অনেকেই মনে করে থাকেন, একসাথে গর্ভধারণ হয়েও ঐ ভাবি / আপুর তুলনায় আমার পেট অনেক ছোট কেন। অনেকেই বলে থাকেন, আমার গর্ভধারনের ৪ মাস/ ৫ মাস / ৬ মাস চলছে কিন্তু এখনো পেট দেখা যাচ্ছে না কেন? তো আজকে এই বিষয় গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। গর্ভধারন করলে পেট বড় দেখায় কেন? ছবিটা লক্ষ্য করুন, এটি আমাদের কোমড়ের দুইটি হাড় সংযোগ হওয়ার ছবি। দুইটি হাড় সংযোগ হয়ে যে বৃত্তাকার অংশ তৈরি হয়েছে তাকে বলা হয় pelvic cavity বা pelvis. মেয়েদের জরায়ু সাধারণত এই pelvic cavity এর ভেতর অবস্থান করে। গর্ভধারণ হলে জরায়ুর ভেতরেই বাচ্চা বড় হতে থাকে। যেহেতু pelvic cavity তে খুব বেশি জায়গা নেই। সেজন্য গর্ভের সন্তান বড় হওয়ার সাথে সাথে জরায়ু  pelvic cavity থেকে উপরের দিকে উঠতে থাকে। উপরে উঠার সাথে সাথে পেটের আকার বৃদ্ধি পেতে থাকে। তখন আমরা বুঝতে পারি পেট বড় হচ্ছে এবং গর্ভের সন্তান বড় হচ্ছে।   গর্ভাবস্থায় পেট কখন বড় হয় ? গর্ভাবস্থায় পেট কখন বড় হয় বিষয়টা জানতে হলে কিছু বেসিক বিষয় সর্ম্পকে জানতে হবে। কারন গর্ভাবস্থায় পেট কখন বড় হয় এটি বিষয়ের সাথে জড়িত। গর্ভধারণের  পুরো সময়টাকে কে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১) First trimester: গর্ভধারনের প্রথম তিন মাস বা ১৩ সপ্তাহ পর্যন্ত সময়টাকে First trimester বলা হয়। ২) 2nd Trimester: গর্ভধারনের ৪-৬ মাস বা ১৪-২৭ সপ্তাহ পর্যন্ত সময়টাকে 2nd trimester বলা হয়। ৩) 3rd Trimester: গর্ভধারনের শেষ তিন মাস বা ২৮-৪০ সপ্তাহ পর্যন্ত সময়টাকে 3rd trimester বলা হয়। মূলত গর্ভধারণের ১৬-২০ সপ্তাহ বা 2nd trimester এর গর্ভাবস্থায় পেট বড় হতে শুরু করে। তবে জরুরী নয় যে সবার একই সময়ে পেট বড় হবে। এটি একটি গড় হিসেব মাত্র। অধিকাংশ মহিলাদের এই সময়ের কিছু সপ্তাহ আগে এবং কিছু সপ্তাহ পরেও পেটে বড় হওয়া বুঝতে স্বক্ষম হয় । অনেকেই গর্ভধারণের ৭ মাস বা ২৯ সপ্তাহে পেটের আকার বড় হওয়া বুঝতে পারেন। গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে গর্ভের সন্তানের আকার থাকে মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার এবং ওজন হয় মাত্র ১৫-২০ গ্রাম। যার ফলে মায়ের পেটের আকৃতিতে কোন প্রভাব ফেলে না, সেজন্য গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে পেটে বুঝা যায় না। অনেক সময় পেটে বড় হওয়ার সাথে সাথে সামান্য গর্ভাবস্থায় পেটে ও  পিঠে ব্যাথা ও হতে পারে। গর্ভাবস্থায় পেট ছোট হওয়ার কারন গর্ভবস্থায় পেট ছোট হওয়ার বেশ কিছু কারন রয়েছে, এগুলোর মধ্যে কিছু স্বাভাবিক কারন আবার কিছু রোগীর জনিত কারনেও হতে পারে। প্রথমে আমরা স্বাভাবিক কারন গুলো জেনে নিবো।  ১) প্রথম গর্ভধারণঃ সাধারণত যারা প্রথম মা হতে চলেছেন তাদের পেটে তুলনা মূলকভাবে ছোট হয় ও দেরিতে বড় হয়। আমাদের পেটে মাংসপেশি রয়েছে, এই মাংসপেশি গুলো আমাদের পেটের অভ্যন্তরের অঙ্গ গুলোকে সার্পোট দেয়। যারা প্রথম বার গর্ভধারন করে করেন তাদের পেটের মাংসপেশি গুলো শক্ত থাকে। যার ফলে জরায়ু হালকা বড় হলেও মাংসপেশিগুলোকে প্রসারিত করে সেটা বাহিরে আসতে বেশি সময় লাগে। তখন মনে হয় পেট বড় হচ্ছে না। এই কারনেই যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের ক্ষেত্রেও পেট দেরিতে বড় হয় বা কম বড় হয়। ২) বয়সঃ আপনি কত বছর বয়সে গর্ভধারন করেছেন এর উপর পেটের আকার নির্ভর করে। যারা কম বয়সে গর্ভধারন করেন তাদের পেটের মাংসপেশি গুলো শক্ত থাকে ফলে তাদের পেট দেরিতে বড় হয় এবং তুলনামূলক ছোট হয়। ৩) যদি আপনার গর্ভে ১ টি বাচ্চা থাকে তাহলে তুলনামূলক ভাবে যাদের গর্ভে জমজ বাচ্চা আছে তাদের তুলনায় ছোট হবে। ৪) সাধারণত যেসকল মায়েরা উচ্চতায় লম্বা তাদের পেট ছোট দেখায় । ৫) সাধারনত যেসকল মায়েদের ওজন কম শরীর বলা পেটে তেমন কোন চর্বি নেই তারা গর্ভবতী হলে পেট তুলনামূলক ভাবে ছোট এবং দেরিতে বড় হয়। রোগজনিত কারনঃ ১) গর্ভবস্থায় পেটে পানির পরিমাণঃ গর্ভাবস্থায় বাচ্চা একটা পানি ভর্তি ব্যাগের ভেতরে থাকে এই ব্যাগের নাম amniotic sac আর পানির নাম amniotic fluid or liquor. গর্ভবস্থায় বাচ্চাকে সবধরনের আঘাত রক্ষা করে এই পানি। গর্ভবস্থায় যদি কারো পানির পরিমান কম থাকে তাহলে পেট তুলনামূলক ভাবে ছোট দেখাবে। এই অবস্থাকে মেডিক্যালের ভাষা বলা হয় Oligohydramnios. গর্ভবস্থায় পেটে পানি কম হলে সন্তান ও মায়ের জন্যে বিপদজনক। এই রকম অবস্থাতে অবশ্যই একজন গাইনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।  ২) বাচ্চার ওজনঃ কোন কারনে যদি গর্ভের সন্তান পরিপূর্ণ ভাবে বৃদ্ধি না হয় বা স্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি না হয় বা Overall Growth & development এ সমস্যা হয় তখন কিন্তু গর্ভবতী মায়ের পেট ছোট দেখাবে। এই অবস্থাকে IUGR (Intrauterine Growth Restriction) বলা হয়। অনেকেই গর্ভবস্থায় পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন না, ফলে বাচ্চার Development ভালো হয়না তখন পেট ছোট দেখায়। গর্ভবস্থায় পেট অতিরিক্ত বড় হওয়ার কারন ১) দ্বিতীয় বা তৃতীয় গর্ভধারন: যে সকল মেয়েরা দ্বিতীয় বা তার অধিক গর্ভধারণ অর্থাৎ প্রথম গর্ভধারণ নয় তাদের পেট তুলনামূলক ভাবে বড় হয়। কারন দ্বিতীয় বা তৃতীয় বার গর্ভধারণ হলে পেটের মাংসপেশি গুলো তুলনামূলক কম শক্ত থাকে৷ কারন প্রথম গর্ভধারনের ফলে পেটের মাংসপেশি কিছুটা প্রসারিত হয়ে যায়। তখন জরায়ু হালকা বড় হলেই বাহিরের দিকে চলে আসে এবং পেটবড় মনে হয়। এই কারনেই দ্বিতীয় বা তৃতীয় গর্ভধারন হলে পেট বড় হওয়া দ্রুত বুঝতে স্বক্ষম হয়। ২) বয়সঃ যারা বেশি বয়সে গর্ভধারণ করেন তাদের পেট বড় হওয়া দ্রুত বুঝতে স্বক্ষম হয় এবং তূলনামূলক বড় হয়। ৩) যাদের গর্ভে জমজ বাচ্চা আছে তাদের পেট স্বাভাবিক ভাবেই যাদের পেটে একটি বাচ্চা তাদের তুলনায় বড় হবে। ৪) উচ্চতাঃ যেসকল মায়েরা উচ্চতায় খাটো তাদের পেট তুলনামূলক ভাবে বড় দেখায় । ৫) যাদের ওজন বেশি বা পেট বড়, তাদের পেটে সাধারণত পেটে চর্বি থাকে। যার ফলে জরায়ুর আকার সামান্য বড় হলেই পেট বড় দেখায়। বিষয়টা এমন না যে তার গর্ভের সন্তান বেশি বড় হচ্ছে, তার সন্তান হয়তো স্বাভাবিক ভাবেই বড় হচ্ছে কিন্তু তার পেটের চর্বির কারনে পেট তুলনা মূলক বড় দেখাচ্ছে। ৬) গর্ভবস্থায় মায়ের পেটে যদি পানির পরিমাণ বেশি থাকে তখন থাকে বলা হয় ployhydromonias. যাদের গর্ভবস্থায় পেটে বেশি পানি থাকে তাদের পেট বড় দেখাবে। গর্ভবস্থায় পেটে পানি বেশি হলে সন্তান ও মায়ের জন্যে বিপদজনক। এই রকম অবস্থাতে অবশ্যই একজন গাইনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ৭) গর্ভবস্থায় গর্ভের সন্তান যদি অতিরিক্ত ওজন হয়ে যায় তখন স্বাভাবিক ভাবেই পেট বড় দেখাবে। বিশেষ করে যাদের ডায়বেটিস আছে তাদের বাচ্চার ওজন বেশি হয়ে যায়। এছাড়া অনেই গর্ভবস্থায় অতিরিক্ত খায় যায় ফলে মোটা হয়ে যায় ফলে পেট বড় দেখায়। ৮) কোন কোন ক্ষেত্রে যদি জরায়ুতে টিউমার সহ গর্ভধারন

গর্ভাবস্থায় পেট কখন বড় হয়? গর্ভাবস্থায় পেট ছোট হওয়ার ৫টি কারন। Read More »

পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথা

পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথা দ্রুত কমানোর উপায়।

বয়সন্ধি কালে পিরিয়ড শুরুর মাধ্যমে একজন নারী তার জীবনের পূর্ণতা লাভ করে থাকেন। সে হিসেবে প্রতিমাসে মেয়েদের মাসিক হওয়া প্রকৃতগত ভাবেই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু অধিকাংশ মেয়েরাই পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথা ভোগে থাকেন । এছাড়া অনেকই বলতে শোনা যায় মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা হলে বাচ্চা নিতে সমস্যা হয়। এই বিষয় গুলো মেয়েরা কারো সাথে সেয়ার করতে পারে না এমন কি নিজের পরিবার কিংবা বন্ধু মহলেও না। আশেপাশের এসব কুসংস্কার শুনে তারা মানসিক ভাবে ডিপ্রেশন চলে আসে। তো আজকে এই বিষয় গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। মাসিকের সময় রক্তক্ষরণ কেন হয়? মেয়েদের প্রজনন তন্ত্রের অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে জরায়ু বা uterus. মেয়েদের জরায়ু গঠিত হয় তিনটি স্তর দ্বারা। ভেতরের যে স্তর থাকে তার নাম এন্ডোমেট্রিয়াম (endometrium). মাসিকের সময় বিভিন্ন হরমোনের (ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন) তারমধ্যের ফলে জরায়ুর ভেতরে অংশ অথাৎ এন্ডোমেট্রিয়াম necrosis বা পচে গিয়েই মূলত রক্তক্ষরণ হয় যাকে আমরা মাসিক বলে থাকি। পিরিয়ডের সময় ব্যাথা কেন হয়? হরমোনের তারমধ্যের ফলে জরায়ুর ভেতরে অংশ এন্ডোমেট্রিয়াম যখন পচে যাওয়া শুরু হয়, তখন এন্ডোমেট্রিয়ামের পচে যাওয়া অংশগুলোকে জরায়ু থেকে বের করার জন্য জরায়ুতে এক ধরনের সংকোচন শুরু হয়। এই সংকোচন থেকেই মূলত মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা হয়। এছাড়া মাসিকের সময় শরীরে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামক আরেক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়। এই প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন জরায়ুর দেয়ালের সংকোচন আরও তীব্র করে। ফলে ব্যথার তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। তবে সবার মাসিকের সময় ব্যাথা হয় না আবার হলেও ব্যাথা ধরন এক হয় না। কারন মাসিকের সময় সবার জরায়ুতে সংকোচন এবং শরীরে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নিঃসৃত হওয়ার পরিমান সমান নয়। কেন সমান নয় এই উত্তর এখনো অজানা। মেয়েদের মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা হওয়াকে মেডিক্যালের ভাষায় বলা হয় Dysmenorrhea. মাসিকের সময় মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা হওয়াকে সাধারনত দুই ভাগে ভাগ করা যায়, ১) প্রাথমিক কারন (Primary Dysmenorrhea) ২) রোগ জনিত কারন (Secondary Dysmenorrhea) ১) প্রাথমিক কারনঃ- মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা যদি কোন রোগের কারন ছাড়াই হয় সাধারণত তাকে primary dysmenorrhea বলা হয়। এটি খবুই কমন, বিশেষ অবিবাহিত মেয়েদের। এখন প্রশ্ন হলো প্রাইমারি dysmenorrhea বুঝার উপায় কি? অধিকাংশ ক্ষেত্রে Primary dysmenorrhea এর কোন নির্দিষ্ট কোন কারন থাকে না । তবে এর কিছু লক্ষণ দেখে বুঝায় যায়। যেমন ক) এটি সাধারনত বংশগত কারনে বেশি হয়, অনেক সময় ভোক্তভূগীর ইতিহাস শুনলে দেখা যাবে তার মা অথবা বোনদের বা পরিবারের কারো মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা ছিলো। খ) বয়সঃ ১৩-১৪ বছর বয়সে মেয়েদের মাসিক শুরু হয়, primary dysmenorrhea সাধারণত মাসিক শুরু থেকেই দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে অবিবাহিত (১৩-১৮ বয়সী) মেয়েদের বেশি হয়। গ) অধিকাংশ সময় এটি দুঃচিন্তার কারনে হয়ে থাকে, বিশেষ করে পরিক্ষার আগে বা কোন কিছু নিয়ে মেয়েরা যদি ডিপ্রেশনে থাকে তাহলে মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা তুলনামূলক বেশি হতে পারে। ঘ) এন্ডোমেট্রিয়াম necrosis বা পচে যাওয়ার কারনে সাধারনত মাসিকের সময় হালকা পেটে ব্যাথা কম বেশি সবার হতে পারে। তবে যদি এমন মনে হয় যে এটি আগের চেয়ে বেশি মনে হচ্ছে এবং ব্যাথার কারনে আপনার স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে কষ্ট হচ্ছে তাহলে হতে পারে এটি Primary dysmenorrhea. ঙ) ব্যাথার ধরন: মাসিকের শুরুর দিকে ব্যাথা বেশি থাকে এবং ব্লিডিং বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যাথা কমে আসে। চ) ব্যাথা সাধারনত পেটের নিচের অংশে শুরু হয় এবং অনেক সময় কোমড় এবং দু’পায়ের উরুর দিকে যেতে পারে। ২) রোগ জনিত কারনঃ- মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা যদি কোন রোগের কারনে হয় সাধারণত তাকে secondary dysmenorrhea বলা হয়। এটি বিবাহিত মেয়েদের বেশি হয়। বিশেষ করে যাদের বয়স ৩০ বছর বা তার চেয়ে বেশি। অথবা যদি এমন হয় পূর্বে কখনো আপনার মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা ছিল না, হঠাৎ করে মাসিকের সাথে ব্যাথা শুরু হয়েছে তাহলে হতে পারে এটি Secondary Dysmenorrhea । Secondary Dysmenorrhea সাধারণ কোন রোগের কারনে হয়, যেমন এন্ডোমেট্রিয়োসিস (Endometriosis) জরায়ুতে টিউমার, জরায়ুতে কোন পলিপ, যেকোন ইনফেকশন বা PID (Pelvic Inflammatory Disease), চকলেট সিস্ট (chocolate cyst), এছাড়া যারা জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্যে IUCD (Intra-Uterine Contraceptive Device) যেমন কপার টি (Copper-T) ব্যাবহার করে থাকেন তাদেরও কিন্তু মাসিকরে সময় ব্যাথা হতে পারে। নোট: মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা প্রাথমিক কারনে হচ্ছে নাকি কোন রোগের কারনে হচ্ছে সেটি নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই একজন গাইনি চিকিৎসকের পরার্মশ নিয়ে পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা উচিত। রোগ জনিত কারনে মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা বুঝার উপায়: পূর্বে কখনো আপনার মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা ছিল না, হঠাৎ করে মাসিকের সাথে ব্যাথা শুরু হয়েছে।  পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথার সাথে  অনিমিত পিরিয়ড হলে ।  পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথার সাথে অতিরিক্ত রক্তক্ষণ হলে। পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথার সাথে গায়ে জ্বর হলে। পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথার সাথে অস্বাভাকি স্রাব হলে। পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথার সাথে পস্রাবে জ্বালা পোড়া ও সহবাসেরর সময় ব্যাথা হলে। এই লক্ষণ গুলো যদি মাসিকের সময় পেটে ব্যাথার সাথে কারো দেখা দেয় তাহলে বুঝতে হবে কোন রোগের কারনে পেটে ব্যাথা হচ্চে। পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথা কতদিন স্থায়ী হয়: পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথা সাধারণত মাসিক শুরুর আগের দিন থেকেই ব্যাথা শুরু হতে পারে এবং মাসিক চলাকালীন ১-৩ দিন পর্যন্ত ব্যাথা স্থায়ী হতে পারে। কখনো কখনো এর চেয়ে বেশি হতে পারে। অবিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে কোন রোগজনিত কারন না থাকলে মাসিক শুরুর কয়েক বছর পরে ব্যাথার স্থায়ীত্ত্বকাল আস্তে আস্তে কমে আসে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বিয়ের পর কিংবা সন্তান প্রসবের পরে রোগজনিত কারন না থাকলে মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা হলে কি করনীয়ঃ প্রাথমিক dysmenorrhea যেহেতু কোন রোগের কারনে হয়না, এটি সাধারনত বিয়ের পরে অথবা বাচ্চা জন্মদানের পরে নিজে নিজে ভাল হয়ে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিয়ের পর বা নরমাল ডেলিভারির পরে প্রাথমিক dysmenorrhea চিরতরে ভালো হয়ে যায়। সেজন্যে এটি নিয়ে দুঃচিন্তার কিছু নেই। তবে কিছু নির্দেশনা মেনে চললে মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা অনেক ক্ষেত্রেই কমানো সম্ভব। মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা হলে ২ ভাবে ব্যাথা কমানোর চেষ্টা করা উত্তম। ১) ঘরোয়া পদ্ধতি ২) ঔষধ সেবন করা। ১) পিরিয়ডের ব্যাথা কমানোর ঘরোয়া পদ্ধতি: ক) মনোবল বৃদ্ধি করা, এবং এই সম্পর্কে তাকে সঠিক জ্ঞান নেয়া। পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথার জন্যে ভয়ের কোন কারন নেই, ১-৩ দিনের মধ্যে ব্যাথা এমনি কমে যাবে। খ) ব্যাথা অসহনীয় হলে ব্যাথা কমানোর জন্যে পেটের নিচের অংশে গরম পানির সেক দেয়া, বাজারে water heater bag পাওয়া যায় যেগুলোর দাম ১০০-২০০ টাকা। সেগুলো কিনে মাসিকের সময় গরম পানির সেক নিতে পারেন। তাতে অনেকটাই ব্যাথা কমে যাবে। এসময় কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন এতে অনেকটাই আরাম হবে (ইনশাআল্লাহ)। গ) পেটে হালকা মেসেজ করতে পারেন এতেও ব্যাথা কমে যাবে ইনশাআল্লাহ। ঘ) আদা সেবন করুন: পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথা কমানোর জন্য আদার কার্যকারিতা রয়েছে। পিরিয়ডের ব্যাথা কমাতে পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগেই আদা কুচি করে এমনি এমনি খেতে

পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যাথা দ্রুত কমানোর উপায়। Read More »

সহবাসের উপযুক্ত সময়

বাচ্চা নেয়ার জন্য সহবাসের উপযুক্ত সময় কখন?

সহবাসের উপযুক্ত সময় মিলন করলে গর্ভধারণের সম্ভবনা থাকে সবচেয়ে বেশি। প্রতিমাসে মাসিকের একটা নির্দষ্ট সময়ে  মেয়েদের ডিম্বাশয় থেকে বাচ্চা হওয়ার  জন্যে একটি ডিম্বাণু নিঃসৃত হয়।ডিম্বানু বের হওয়ার সময়টাই হচ্ছে গর্ভধারনের জন্যে সহবাসের উপযুক্ত সময়। কেউ যদি বাচ্চা নিতে চান তাহলে অবশ্যই ডিম্বাণু বের হওয়ার সময়টাতে মিলন করতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়  স্বামী-স্ত্রী দুজনেই সহবাসের উপযুক্ত সময় অনুযায়ী সহবাস করতে পারেন না। এছাড়া, বর্তামনে জব, ক্যারিয়ার ইত্যাদির কারনে স্বামী-স্ত্রী দুজনে একসাথে থাকা হয় না।ফলে প্রেগন্যান্সি কনসিভ করতে সমস্যা হয়। তো আজকে আমরা জানবো, কিভাবে আপনি গর্ভধারনের উপযুক্ত সময়ে মিলন করে বের দ্রুত গর্ভধারন করবেন। মাসিকের পর কখন সহবাসের উপযুক্ত সময়? গর্ভধারনের জন্যে মেয়েদের ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বের হয়, ডিম্বানু বের হওয়ার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ওভুলেশন বা Fertile window. এই ওভুলেশনের সময় হিসবে করে মিলন করলে গর্ভধারনের সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। যাকে গর্ভধারনের উপযুক্ত  সময় হিসেবে গন্য করা হয়। গর্ভধারনের জন্য সহবাসের উপযুক্ত সময় বের করার জন্যে  আপনাকে কতগুলো পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। যেমন  ১) সঠিক দিন গননাঃ  প্রত্যেক নারীদের মাসিক চক্র যেমন আলাদা তেমনি প্রত্যেকের ওভুলেশনের সময় ও আলাদা হয়ে থাকে। মাসিক চক্র অনুসারে ওভুলেশন ডে গণনা করতে হবে।ওভুলেশনের ডে গণনা করার সূত্র হলো Menstrual cycle – 14. অর্থাৎ মাসিক চক্র বের করে সেখান থেকে ১৪ দিন বিয়োগ করলে ওভুলেশন ডে বের হয়ে যাবে।  কিভাবে গননা করবেন? প্রথমে আপনি একটি ক্যালেন্ডার নির্বাচন করুন, তারপর যেদিন আপনার মাসিক শুরু হয়েছে সেই দিনটি চিহ্নিত করুন। মনে করি আপনার ১ তারিখে মাসিক শুরু হয়েছে । তারপর  আপনার মাসিক কতদিন পর পর হয় বা আপনার মাসিক সাইকেল কতদিনের তা থেকে ১৪ দিন বিয়োগ করুন। উদাহারন দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করছি। উদাহরণ-১ঃ ধরুন আপনার মাসিক চক্র হিসেব করে দেখলেন আপনার ২৮ দিন পর পর মাসিক হয়। তাহলে আপনার ভুলেশন বা ডিম্বপাতের সময় হলো  ২৮-১৪ = ১৪। তাহলে আপনার মাসিকের ১৪তম দিন টি হলো আপনার ওভুলেশনের সম্ভাব্য সময়।এই ১৪ তম দিন হিসেব করতে হবে মাসিক শুরুর দিন থেকে। অথার্ৎ ১ তারিখে মাসিক শুরু হয়েছে তাহলে আপনার  ১৪ তারিখ হচ্ছে মাসিকের ১৪ তম দিন। এখন এই ১৪ তম দিনের সাথে ৩ দিন আগে পরে যোগ-বিয়োগ করে নিন। ১৪ তম দিনের সাথে ৩ দিন যোগ-বিয়োগ করলে হয় ১১ থেকে ১৭তম  দিন। সুতরাং আপনার যদি প্রতিমাসে ২৮ দিন পরপর মাসিক হয় তাহলে মাসিকের ১১-১৭ তম দিন হচ্ছে আপনার ওভুলেশনের সম্ভাব্য সময় বা গর্ভধারনের জন্য সহবাসের উপযুক্ত সময়। এখন অনেকেই ভাবতে পারেন ১৪ তম দিনের সাথে ৩ দিন আগে ও পরে যোগ-বিয়োগ করার উদ্দেশ্য কি?   অনেক সময় দেখা যায় মাসিক ২-৩ দিন আগে হয়ে যায় আবার কখনো ২-৩ দিন পরেও হয়ে থাকে। মাসিক আগে পরে হলে ওভুলেশন ২-৩ দিন আগে বা পরে হতে পারে। সেজন্যে ওভুলেশন ডে বা Fertile window কে একটু বেশি করে নেয়া হয়, যেন কোন ভাবেই ওভুলেশন ডে মিস না হয়। ওভুলেশনের সঠিক দিন গণনা করার জন্যে অবশ্যই আপনার পিরিয়ড নিয়মিত হতে হবে এবং আপানাকে আপনার মাসিকচক্র বা Menstrual cycle গণনা জানতে হবে। (মাসিকচক্র বা  Menstrual cycle গণনা পদ্ধতি নিয়ে জানতে  চাইলে পড়ুন) ২) সাদা স্রাব (Cervical Mucus) ঘনত্ব পর্যবেক্ষণঃ মাসিক চক্রের বিভিন্ন সময় হরমোনের তারতম্যের কারনে মেয়েদের যোনি পথে কিছু স্রাব নিঃসৃত হয়।এই স্রাব কখনো ঘন আঠালো কখনো পাতলা, কখনো কম কখনো বেশি হয়ে থাকে। ওভুলেশনের ১-২ দিন আগ থেকে মেয়েদের যোনি পথে এক  ধরনের স্রাব নিঃসৃত হয়। যা দেখতে পাতলা, স্বচ্ছ, আঠালো অনেকটা ডিমের সাদা অংশের মত যাকে cervical mucus বলে। এই স্রাব হাতে নিলে কয়েক ইঞ্চিপর্যন্ত লম্বা হয়। এই স্রাব গন্ধ ও রঙহীন হবে।এরকম স্রাব ওভুলেশনের অন্যতম প্রধান লক্ষণ।বিশেষ করে যাদের পিরিয়ড অনিয়মিত তাদের  জন্যে সবচেয়ে কার্যকরী পদ্ধতি হচ্ছে এমন সাদা স্রাব দেখে মিলন করা। এরকম স্রাব যেদিন দেখবেন, সেদিন থেকে সহবাস শুরু করবেন এবং যেদিন পাতলা স্রাব যাওয় বন্ধ হবে তার ৩ দিন পর পর্যন্ত মিলন করবেন।   যোনিতে এমন পাতলা স্রাব দেখে মিলন করলে গর্ভধারনের সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।  ৩) শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করে মিলন করাঃ মানব দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হচ্ছে ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাই।ওভুলেশন সময় বিভিন্ন হরমোনের মাত্রা তারতম্য হয়। ফলে ওভুলেশনের মেয়েদের শরীরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকে।মোটমোটি ০.২ থেকে ০.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট। যা  পরিমাপ না করলে বুঝা সম্ভব নয়। মাসিক বন্ধ হওয়ার পর থেকে তাপমাত্রা পরিমাপ শুরু করে একটা চার্ট তৈরি করুন। যেদিন থেকে তাপমাত্রা বেশি দেখবেন সেদিন থেকে সহবাস শুরুর করবেন।ওভুলেশনের সময় তাপমাত্রা পর পর তিন দিন বেশি থাকে। তিন দিন তাপমাত্রা বেশি থাকার পরে ওভুলেশনের সময় শেষ হয়ে যায়। এই ভাবে তাপমাত্রা পরিমাপ করে সহবাসের উপযুক্ত সময়কে কাজে লাগানো সম্ভব। কিভাবে তাপমাত্রা পরিমাপ করবেন? ক) আপনাকে অবশ্যই তাপমাত্রা পরিমাপের জন্যে একটি ডিজিটাল থার্মোমিটার নির্বাচন করতে হবে।যেকোন ফার্মেসীতে ১৫০-২০০ টাকায় ডিজিটাল থার্মোমিটার পেয়ে যাবেন।  খ) সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করার আগেই  তাপমাত্রা পরিমাপ করতে হবে।   গ) অবশ্যই মুখে (জিহ্বার নিচে) তাপমাত্রা পরিমাপ করতে হবে) ৪) ওভুলেশন টেস্ট কিট ব্যবহারঃ ওভুলেশনের ২-৩ দিন আগ থেকে মেয়েদের শরীরে LH (Luteinizing Hormone) বৃদ্ধি পায়। তখন পস্রাবে luteinizing hormone এর উপস্থিতি পাওয়া যায়। তখন ওভুলেশন টেস্ট ব্যবহার করেও সহবাসের উপযুক্ত সময় বা ওভুলেশন ডে সনাক্ত করা যায়।   কিভাবে ওভুলেশন টেস্ট কিট ব্যবহার করবেন? সাধারণত ওভুলেশন টেস্ট কিট pregnancy সনাক্ত কারী টেস্ট কিটের মতোই। মাসিক চক্র হিসেব করে যেদিন আপনার Fertile window শুরু হবে, সেদিন থেকে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে, সকাল বেলার প্রথম পস্রাব দিয়ে টেস্ট করবেন।টেস্ট পজেটিভ আসলে বুঝবেন ২৪-২৪ ঘন্টার মধ্যে আপনার ওভুলেশন হবে। সেই অনুযায়ী মিলন করলে গর্ভধারনের সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।  ওভুলেশনের সময় কিভাবে মিলন করবেন? মেয়েদের ওভুলেশন বা ডিম্বাণু বের হওয়ার পরে, ডিম্বানু ২৪ ঘন্টা জরায়ুতে অবস্থান করে এবং মিলনের পরে ছেলেদের শুক্রানু মেয়েদের যৌনিতে ৫ দিন পর্যন্ত অবস্থান করে। বাচ্চা হওয়ার জন্যে সুস্থ্য শুক্রানুর দরকার। অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতিদিন মিলনের চেয়ে ১ দিন পর পর মিলনকরলে শুক্রানুর গুনাগুন ভাল থাকে। যেহেতু শুক্রানু মেয়ের যোনিতে ৫ দিন পর্যন্ত বেচে থাকে এবং ওভুলেশনের পর ডিম্বানু ২৪ ঘন্টা অবস্থান করে,তাই একদিন পর পর মিলন করলে যখন ডিম বের হোক না কেন আপনার বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু থাকবে ইনশাআল্লাহ। ওভুলেশনের সময় কি সকলেই এসব লক্ষণ থাকে? উত্তর হচ্ছে না।ওভুলেশন হলে সবার এসব লক্ষণ নাও থাকতে পারে। অনেকের ১-২ টা লক্ষণ থাকতে পারে। কেউ কেউ আবার কখন ওভুলেশন হয় বুঝতেই পারেন না। তাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে একটা লক্ষণের উপর নির্ভর না করে সবগুলো পদ্ধিতের সমন্বয় করে ওভুলেশন ডে অনুসন্ধান করা। প্রত্যেক নারীরে মাসিক  চক্র যেমন আলাদা তেমিন ওভুলেশন ডে এবং এর লক্ষণ গুলো আলাদা হয়ে থাকে।কোন পদ্ধতি ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বের হওয়ার সঠিক সময় ১০০% নিশ্চিত করতে পারে না।তবে এই বিষয় গুলো অনুসরণ করে সহবাসের উপযুক্ত সময় মিলন গর্ভধারনের সম্ভবনা বৃদ্ধি পাবে (ইনশাআল্লাহ) বাচ্চা না হলে কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে,  স্বামী স্ত্রী একসাথে থাকেন, সপ্তাহে ২-৩ বার মিলন করেন, এ ক্ষেত্রে প্রায়

বাচ্চা নেয়ার জন্য সহবাসের উপযুক্ত সময় কখন? Read More »